মহাভারত একটি বিশাল ঐতিহাসিক গ্রন্থ। হিন্দুদের কাছে মহাভারত ধর্মীয়গ্রন্থ হিসেবে গৃহীত। এটি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন সংস্কৃত ভাষায় রচনা করেছেন। তিনি ব্যাসদেব নামে পরিচিত। কুরু-পাণ্ডবদের মধ্যে বিদ্বেষ এবং কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের মাধ্যমে পাণ্ডবদের জয়লাভ মহাভারতের মূল কাহিনি। এই কাহিনির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনেক উপকাহিনি। মহাভারতে মোট আঠারোটি পর্ব রয়েছে।
হস্তিনাপুর নামে একটি রাজ্য ছিল। সেখানকার রাজা ছিলেন চন্দ্রবংশীয় শান্তনু। রাজা শান্তনুর তিন পুত্র ছিল—দেবব্রত, চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্য। জ্যেষ্ঠ দেবব্রত বিয়ে করবেন না এবং সিংহাসনেও বসবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। এই প্রতিজ্ঞার জন্য তাঁর নাম হয় ভীষ্ম। চিত্রাঙ্গদের অকাল মৃত্যু হয়। তাই বিচিত্রবীর্য রাজা হন। তাঁর দুই পুত্র –ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডু। ধৃতরাষ্ট্র জন্মান্ধ ছিলেন, তাই পাণ্ডু রাজা হন। পাণ্ডুর মৃত্যুর পর যুধিষ্ঠিরের রাজা হওয়ার কথা। কিন্তু ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রগণ তা মেনে নিতে পারেননি। আর তখন থেকেই শুরু হয় বিবাদ। এঁরা সকলেই কুরু রাজার বংশধর বিধায় কৌরব বলা হয়। কিন্তু পাণ্ডুর সন্তানরা ক্রমে পাণ্ডব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র দুর্যোধন অনেকবার পাণ্ডবদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা রক্ষা পেয়ে যান। পাণ্ডবদের রাজ্যছাড়া করার জন্য দুর্যোধন মামা শকুনিকে নিয়ে তাঁদেরকে পাশা খেলায় আহ্বান করেন। পাণ্ডবরা পাশা খেলায় পরাজিত হন এবং শর্ত অনুযায়ী বনবাসে যান। কিন্তু পাণ্ডবরা ফিরে এলে দুর্যোধন তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। তখন শ্রীকৃষ্ণ উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্যোধন তা মেনে নেয়নি। আর তখনই শুরু হয়ে যায় উভয়পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ। এটি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ নামে পরিচিত। আঠারো দিনব্যাপী কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ হয়। দুর্যোধনরা পরাজিত হয়। ধর্মের জয় হলো আর অধর্মের পরাজয় হলো।
Read more